ইসলাম ও নৈতিকতা পরস্পর পরিপূরক ব্যাখ্যা করো
ইসলাম ও নৈতিকতা পরস্পর পরিপূরক এবং এমন দুটি বিষয়, যেগুলো একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত ও পরস্পর পরিপূরক। ইসলামের মূলভিত্তি হল নৈতিকতা। ইসলাম শুধু একটি ধর্মীয় বিশ্বাস ব্যবস্থা নয়, বরং একটি পূনাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা যেখানে নৈতিকতা বা চরিত্র গঠনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। সুন্দর জীবন গঠনে ইসলাম ও নৈতিকতার গুরুত্ব অপরিসীম। নৈতিকতা ছাড়া ইসলাম অসম্পূর্ণ। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বহুবার নৈতিক চরিত্রের কথা বলা হয়েছে।
পবিত্র কোরআন ও হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, আমি নৈতিক চরিত্রের পরিপূর্ণতা সাধনের জন্যই প্রেরিত হয়েছি। এই হাদিস থেকে স্পর্ষ্ট বোঝা যায় ইসলামের মূল উদ্দেশ্য হল মানুষের মধ্যে উত্তম নৈতিক গুণাবলী গড়ে তোলা। ইসলাম ও নৈতিকতা এই সম্পর্কে আমরা নীচে বিস্তারিত আলোচনা জানতে পারব।
পেজ সূচিপত্রঃ ইসলাম ও নৈতিকতা পরস্পর পরিপূরক ব্যাখ্যা করো
- ইসলামের ও নৈতিকতা পরস্পর পরিপূরক
- ইবাদতের মূল উদ্দেশ্য নৈতিক উন্নয়ন করা
- নৈতিক শিক্ষার উন্নতি হল পরিবারে
- নবী সাঃ জীবনে নৈতিকতার আদর্শ
- নৈতিকতা ছাড়া ইসলাম ধর্ম অসম্পূর্ণ
- ইসলামে নৈতিকতা সামাজিক শান্তির চাবিকাঠি
- নৈতিকতা মানুষের আত্মিক উন্নতি ঘটায়
- আচার আচরণে নৈতিকতা বজায় রাখা
- আর্তসংযম ও ধৈর্য নৈতিকতার বৈশিষ্ট্য
- চূড়ান্ত বিচারেও ইসলামে নৈতিকতা বিবেচ্য
ইসলামের ও নৈতিকতা পরস্পর পরিপূরক
ইসলাম ও নৈতিকতা পরস্পর পরিপূরক কারণ নৈতিকতা বলতে আমরা জানি নৈতিকতা হল মানুষের আচরণ, চিন্তা ও ব্যাবহারে ভালো মন্দের পার্থক্য করার ক্ষমতা এবং সততা, ইনসাফ, দয়া, সহমর্মিতা, দায়িত্ববোধ ইত্যাদি
গুণাবলির প্রকাশ। সহজভাবে বললে সঠিক কাজ করা এবং ভুল কাজ থেকে বিরত থাকার
নীতিমালা হল নৈতিকতা। ইসলামে নৈতিকতাকে ঈমানের অংশ বলা হয়েছে। রাসুল সাঃ বলেছেন তোমাদের মধ্যে
সেই ব্যাক্তি সর্বত্তম, যার চরিত্র সবচেয়ে উত্তম।
নৈতিকতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক
- সত্য কথা বলা
- অন্যায়ের প্রতিবাদ করা
- বড়দের সম্মান ও ছোটদের স্নেহ করা
- প্রতারণা ও মিথ্যা থেকে দূরে থাকা
- নিজের কাজ নিজে করা
- ন্যায়বিচার করা ও গ্রহণ করা
ইবাদতের মূল উদ্দেশ্য নৈতিক উন্নয়ন করা
ইবাদতের মূল উদ্দেশ্য হল নৈতিক উন্নয়ন করা কারণ নৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে একজন
মানুষকে পূর্ণাঙ্গভাবে উন্নত চরিত্রের অধিকারী করা যায়। ইবাদতের মূল
উদ্দেশ্য হল মানুষের আত্মিক ও নৈতিক উন্নয়ন সাধন করা। নামাজ, রোজা, হজ কিংবা
যাকাত প্রত্যেকটি ইবাদতের মূল উদ্দেশ্য হল নৈতিক উন্নয়ন করা যা মানুষকে সংযমী ও
ন্যায়ের পথে অনুসরণকারী করে তোলে। ইবাদতের মাধ্যমে একজন মানুষ আল্লাহর নৈকট্য লাভ
করে তেমনি তার অন্তর বিশুদ্ধ হয় চিন্তা চেতনায় আসে ইতিবাচক পরিবর্তন।
নিয়মিত ইবাদত করলে চরিত্র হয় সৎ এবং মহৎ। প্রবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, নামাজ
মানুষকে মন্দ ও অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখে। ইবাদতের মাধ্যমে সমাজে ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। তাই বলা যায় ইবাদতের মাধ্যমে নৈতিক উন্নয়ন করা সম্ভব।
আরও পড়ুন ঃ নৈতিক শিক্ষার
উন্নতি হল পরিবারে
নৈতিক শিক্ষার উন্নতি হল পরিবারে
নৈতিক শিক্ষার মূল ভিত্তি হল পরিবার। নৈতিকতা মানুষকে ঠিক ভুলের পার্থক্য সেখায়। একজন মানুষ অর্থাৎ শিশু জন্মের পর
থেকে তার পরিবারের কাছে থেকে মা বাবার থেকে নৈতিক শিক্ষা পায়। একজন মানুষের চরিত্র, আচরণ, ভদ্রতা এবং মূল্যবোধের মূল
শিক্ষা পায় পরিবার থেকে। পরিবারের সদস্যদের ব্যবহার, ভাষা এবং মনোভাব শিশুর উপর
প্রভাব ফেলে। পরিবার যদি আদর্শিক পরিবেশ দেয় তাহলে শিশুর চরিত্র দৃঢ় হয়। পরিবারে নিয়মিত নৈতিক শিক্ষা নিয়ে আলোচনা করা উচিত। গল্প, উপদেশ ও বাস্তব উদাহরণের মাধ্যমে
শিখানো হোক নৈতিক শিক্ষা।
আমাদের পরিবারে ছোটদের কোন ভুল হলে ধৈর্য সহকারে বোঝাতে হবে ও সংশোধন করে শিখাতে হবে নৈতিক শিক্ষা। পরিবারে শিশুরা যা দেখে তাই শিখে তাই আমাদের পরিবারের সবাইকে
ছোট থেকে নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে যাতে বড় হলে নৈতিক চরিত্রের অধিকারী হতে পারে।
নবী সাঃ জীবনে নৈতিকতার আদর্শ
পৃথিবীর ইতিহাসে এমন বহু মহান ব্যাক্তি আছে জন্মগ্রহন করেছেন যারা মানবজাতির
কল্যাণে অসামান্য অবদান রেখেছেন। তবে নৈতিকতা ও আদর্শ চরিত্ররের অধিকারী হিসাবে
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবন সর্বোচ্চ স্থানে প্রতিষ্ঠিত। আল্লাহ
তায়ালা স্বয়ং কুরআনে বলেছেন আর নিশ্চয় তুমি সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারি। ইসলাম ও নৈতিকতা পরস্পর পরিপূরক। নবী সাঃ
এর মধ্যে সব নৈতিক চরিত্রের গুনাবলি ছিল যেমন সত্যবাদিতা, ধৈর্যসিলতা, ক্ষমাশীলতা, ন্যায়বিচার, আবেগ ও সংযম।
আমাদের সমাজে যখন দুর্নীতি, মিথ্যাচার, হিংসা, অবিচার বেড়েই চলেছে তখন নবীজীর
জীবন থেকে নৈতিকতার শিক্ষা গ্রহন করা। ব্যাক্তি জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক ও সমাজ জীবনে
যদি আমরা তার আদর্শ গ্রহন করি তাহলে একটি শান্তি পূর্ণ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।
নৈতিকতা ছাড়া ইসলাম ধর্ম অসম্পূর্ণ
নৈতিকতা ছাড়া ইসলাম ধর্ম অসম্পূর্ণ কারণ ইসলাম ধর্ম শুধু একটি
উপাসনা ধর্ম নয় বরং এটি একটি পুনাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা যেখানে ইবাদতের
পাশাপাশি নৈতিকতা বা চরিত্র গঠনের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। ইসলাম শুধু নামাজ, রোজা, হজ কিংবা যাকাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ
নয়। ইসলামের মূল শিক্ষা হল মানুষের মধ্যে নৈতিক গুণাবলীর চর্চা করা যেমন সত্যবাদিতা, ইনসাফ, দয়া,সহমর্মিতা, ক্ষমাশীলতা ইত্যাদি। ইসলাম ও নৈতিকতা পরস্পর পরিপূরক, অনেক হাদিসে আছে কেউ যদি ইবাদতকারি হয়
কিন্তু তার নৈতিকতা দুর্বল হয় যেমন গীবত করে, মিথ্যা কথা বলে, প্রতারণা
করে, অন্যের হক নষ্ট করে তাহলে সে আল্লাহর কাছে প্রিয় নয়।
তাই বলা যাই নৈতিকতা ছাড়া ইসলাম ধর্ম অসম্পূর্ণ। ইসলাম মানুষকে সৃষ্টির সেরা
বানাতে চায় আর তার প্রধান হাতিয়ার হল নৈতিকতা ও চরিত্র। তাই আমাদের প্রতিদিনের জীবনে নামাজের মত নৈতিকতার চর্চা করা গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন ঃ
ইসলামে নৈতিকতা সামাজিক শান্তির চাবিকাঠি
ইসলামে নৈতিকতা সামাজিক শান্তির চাবিকাঠি
ইসলাম ধর্ম একটি পূর্ণাঙ্গ
জীবন ব্যবস্থা এটি আমাদের ব্যাক্তিগত পারিবারিক এবং সামাজিক জীবনের
প্রতিটি স্তরে শান্তি ও সুব্যবস্থা্র শিক্ষা দেয়। আর এই শান্তি প্রতিষ্ঠার
মূল হল নৈতিকতা। নৈতিকতার মানে ভালো মন্দের পার্থক্য করে সঠিক কাজ করা।
নৈতিকতা ছাড়া সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব না। যখন সমাজে মিথ্যা,
অন্যায়, দুর্নীতি, হিংসা, প্রতারণা বেড়ে যায় তখন শান্তি নষ্ট হয়। পারস্পরিক
বিশ্বাস হারিয়ে যায় তৈরি হয় অস্থিরতা। ইসলামের শিক্ষা হল তখন মানুষের
নৈতিক গুণাবলীর দ্বারা সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। ইসলাম ও নৈতিকতা পরস্পর পরিপূরক।
ইসলামে বলা হয়েছে শুধু ইবাদত নয় একজন মানুষের নৈতিক আচরণই সমাজকে সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ করে তুলতে পারে। নৈতিকতা ছাড়া সমাজে
শান্তি সম্ভব নয়। তাই বলা যায় ইসলামে নৈতিকতা সামাজিক শান্তির চাবিকাঠি।
নৈতিকতা মানুষের আত্মিক উন্নতি ঘটায়
নৈতিকতা মানুষকে সৎ ও উত্তম চরিত্রের আধিকারি হতে শেখায় যা আত্মিক উন্নয়নের
ভিত্তি। নৈতিক আচরণ যেমন সত্য কথা বলা,অন্যায় থেকে বিরত থাকা, পরোপকার করা ইত্যাদি
মানুষকে অন্তর থেকে বিশুদ্ধ করে তোলে। যার ফলে ব্যাক্তি কেবল বাহ্যিকভাবে নয় অন্তর থেকেও উন্নত হয়। যখন কেউ নৈতিকভাবে জীবন যাপন করে তখন তার মধ্যে অহংকার, হিংসা, লোভ ইত্যাদি আস্তে
আস্তে কমতে থাকে। সান্ত জীবন যাপন করলে মানুষ কারো সাথে কোন ঝামেলায় জড়ায় না। ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে
সৎ ও নৈতিক জীবন যাপন আত্মিক উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।
আচার আচরণে নৈতিকতা বজায় রাখা
আচার আচরণে নৈতিকতা বজায় রাখা এটি সমাজ পরিবার এবং ব্যাক্তিগত জীবনে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। কথা বার্তা ব্যবহার যদি ভালো হয় তবে তা এক প্রকার নৈতিক আচরণ।
এটি অন্যের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ। দৈনন্দিন জীবনে আমরা যদি সত্য
কথা বলি ন্যায়ের পথে থাকি তবে তা নৈতিকতার চর্চা। আমাদের উচিত বড়দের সম্মান
ছোটদের স্নেহ করা। রাগের সময় সংযত থাকা কারো ভুল হলে ক্ষমা করে দেওয়া। এই আচরণ
গুলো মানুষকে আত্মিকভাবে উন্নত করে।
তাই বলা যাই শুধু নিজের লাভ না দেখে অন্যের উপকার করা সাহায্য সহযোগিতা করা এটা
নৈতিক আচরণের বড় দিক। আচার আচরণে নৈতিকতা মানুষকে প্রকিত মানুষ করে তোলে। আমাদের
আচার আচরণে নৈতিকতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলাম ও নৈতিকতা পরস্পর পরিপূরক।
আরও পড়ুন ঃ চূড়ান্ত বিচারেও ইসলামে নৈতিকতা বিবেচ্য
আর্তসংযম ও ধৈর্য নৈতিকতার বৈশিষ্ট্য
আর্তসংযম মানে হল নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। লোভ, রাগ, হিংসা বা আকাঙ্ক্ষার
মত প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রন করতে পারা আর্তসংযমের পরিচয়। এটি নৈতিক
জীবনের ভিত্তি কারণ নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে না পারলে অন্যের প্রতি দায়িত্ব পালন
করাও কঠিন। আর ধৈর্য মানে হল সহনশীলতার শক্তি। প্রতিকূল অবস্থায় হাল না
ছেড়ে হতাশার কাছে আর্তসমর্পণ না করাই হল ধৈর্য। ধৈর্যশীল মানুষ সব
সময় ন্যায়ের পথে অটল থাকে। আর্তসংযম এবং ধৈর্য আত্মার পরিশুদ্ধি আনে যার মাধ্যমে মানুষ নৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। পারস্পরিক সহনশীলতা ঝগড়া বিবাদ থেকে বিরত থাকা এসব
নৈতিক সমাজ গঠনে সহায়ক। প্রায় সব ধর্মেই আর্তসংযম ও ধৈর্যকে মহৎ গুণ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
চূড়ান্ত বিচারেও ইসলামে নৈতিকতা বিবেচ্য
ইসলাম ধর্মে চূড়ান্ত বিচারেও ইসলামে নৈতিকতা বিবেচ্য কারণ নৈতিকতা কেবল সমাজ জীবনের জন্যেই গুরুত্বপূর্ণ নয় বরং মৃত্যুর পরে আখিরাত বা পরকালের হিসাব নিকাশেও
তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত। হাদিসে নবী করিম সাঃ বলেছেন আমি
উত্তম চরিত্র পরিপূর্ণ করতে প্রেরিত হয়েছি। কিয়ামতের দিন মানুষকে তার আচার আচরণ,
কথাবার্তা অন্যের সঙ্গে ব্যাবহার ইত্যাদির উপর বিচার করা হবে। হাদিসে বলা
হয়েছে তোমাদের মধ্যে সেই ব্যাক্তি উত্তম যার চরিত্র উত্তম। ইসলামে ইবাদতের
পাশাপাশি নৈতিকতা চূড়ান্ত বিচারের মানদণ্ড। তাই বলা যায় নৈতিক চরিত্র কেবল
দুনিয়ার সম্পদ নয় পরকালের সফলতার চাবিকাঠি।
লেখকের মন্তব্য ঃ ইসলাম ও নৈতিকতা পরস্পর পরিপূরক ব্যাখ্যা করো
ইসলাম ও নৈতিকতা পরস্পর পরিপূরক কারণ নৈতিকতা শুধু সামাজিক বা ব্যাক্তিগত উন্নতির উপাদান নয় বরং এটি একটি মানুষকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে। ইসলামে নৈতিকতা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে তা ইবাদতের মতই মূল্যবান এবং আখিরাতে এর উপর ভিত্তি করে বিচার ও হতে পারে। আমরা যদি নৈতিকতার আলোকে জীবন পরিচালনা করি তবে ব্যাক্তি পরিবার সমাজ সবকিছুতে এক ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে। তাই আজ প্রয়োজন ইসলামী নৈতিকতার শিক্ষা শুধু মুখে নয়, বাস্তব জীবনেও চর্চা করা।
মুক্তা আইটিনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url